Thursday, July 26, 2018

পারলে শেয়ার করুনঃ হয়তো শারমিনদের মত অসহায় মেয়েদের পাশে কেউ না কেউ এসে দাড়াতে পারেঃ

পারলে শেয়ার করুনঃ
হয়তো শারমিনদের মত অসহায় মেয়েদের পাশের কেউ না কেউ এসে দাড়াতে পারেঃ
চোখের মনিটা তার কালো হওয়ার কথা ছিল; কিন্তু কালো নয়, হয়ে গেলো সাদা। নাম না বলে তার উদ্দেশ্যে কিছু বললে সেটা হয়তো সে বুঝতে পারবে না। যতক্ষণ না, তাকে একটু স্পর্শ করে ইঙ্গিত করা হবে যে তাকে কিছু বলা হচ্ছে। সে হয়তো আপনার দিকে তাকাবে। সেই তাকানোতে দৃষ্টি নেই। সেখানে শুধুই শূন্যতা। কারণ, তার চোখে যে আলো নেই! নিষ্ঠুর এই পৃথিবী তার চোখের আলো কেড়ে নিয়েছে ছয় বছর বয়সে। এখন সে দৃষ্টিহীন। সমাজ যাদের নাম দিয়েছে ‘অন্ধ’।

যার কথা বলা হলো এতক্ষণ, নাম তার শারমিন আক্তার। নিয়তি যদি শুধুমাত্র তার দৃষ্টি কেড়ে নিয়েই ক্ষান্ত হতো, তাতেও অনুযোগ করার কোনো কারণ থাকতো না। কিন্তু তার দৃষ্টি কেড়ে নেয়ার আগে নিয়তি কেড়ে নিয়েছে তার বাবাকে। মায়ের গর্ভে যখন আট মাস, তখনই না ফেরার দেশে চলে যায় শারমিনের বাবা। জন্মের এক বছরের মধ্যে হারালো মা’কেও। ওই এতটুকুন বয়সে আশ্রয় মিলেছিল বাগেরহাটে নানির কাছে। মাত্র এক বছর বয়সে মা-বাবা দু’জনকেই যে হারিয়ে ফেলে, তার চেয়ে অসহায় আর কে আছে পৃথিবীতে?

শারমিনের পৃথিবীটা তাই জন্মের পর থেকেই অন্ধকার! তার চোখের আলো থেকেও যেন কোনো লাভ ছিল না। তবুও, যে চোখ তাকে পথ চলতে আলো বিলাতো, সেই চোখের আলোও হারিয়ে ফেললো মাত্র ৬ বছর বয়সে। চোখের মনি কালো থেকে সাদা হতে লাগলো। দৃষ্টিশক্তি কমে যেতে থাকলো। ধীরে ধীরে পৃথিবী অন্ধকার হয়ে গেলো শারমিন আক্তারের।

মামা-বাবা থাকলে হয়তো শারমিনকে কোনো ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতো। কিন্তু যে কি-না পৃথিবীর চেয়েও ভারি কষ্ট বুকে নিয়ে জন্ম নেয়, তার জন্য আর ভালো কি অপেক্ষা করতে পারে? শারমিনের ভাগ্যেও জুটলো না কোনো চিকিৎসা। ৬ বছর বয়স পূর্ণ হওয়ার আগেই এক সময় সে সম্পূর্ণ দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলে। হয়ে যায় পুরোপুরি অন্ধ।

একবার শুধু নিজেকে ছয় বছর বয়সী এই মেয়েটার জায়গায় কল্পনা করে দেখুন! কল্পনা করুন, আপনার বাবা-মা নেই, এরপর আপনি দৃষ্টি শক্তিও হারিয়ে ফেললেন। এই দুনিয়ায় চারপাশে কেউ নেই, কেমন অনুভূতি হবে আপনার? সত্যিকারার্থেই পৃথিবীতে শারমিন আক্তারের চেয়ে অসহায় আর কেউ ছিল না তখন।

অন্ধ অবস্থায় নানির কাছে কাটলো আরও প্রায় পাঁচ বছর; কিন্তু এমন এক প্রতিবন্ধী ছোট্ট মেয়েকে মায়া-মমতা আর আদর ভালোবাসা দিয়ে কতদিন কে আগলে রাখবে? এখনকার সমাজ যেখানে একজন সুস্থ-সবল মানুষকেও আশ্রয় দিতে অপারগ, সেখানে ৯-১০ বছর বয়সী একজন অন্ধের দায়িত্বভার টানবে কে? টানলো না শারমিনের নানিও। তারা সিদ্ধান্ত নিলো তাকে রাস্তায় ফেলে চলে যাওয়ার। কী নিষ্ঠুর চিন্তা, কী নিষ্ঠুর সিদ্ধান্ত! মেয়েটি তার কিছুই জানতে পারলো না।

১১ বছর বয়স তখন তার। হঠাৎ একদিন তার নানি তাকে বললো, ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাব। নিয়ে আসলো ঢাকায়। কোনো এক রাস্তায় তাকে দাঁড় করিয়ে নানি বললো, তুমি এখানে দাঁড়াও আমরা আসতেছি। সেই যে গেলো আর ফিরলো না। শারমিন সকাল থেকে দাঁড়িয়ে থাকলো বিকেল পর্যন্ত। অপেক্ষা আপনজনের। তারা আসবে, তাকে নিয়ে যাবে; কিন্তু কেউ আর ফিরলো না। বাবা-মা দু’জনকে হারানোর পর যখন চোখের আলোটাও হারিয়ে ফেললো, তখন নানিই ছিল তার সব কিছু, তার শেষ সম্বল। শেষ পর্যন্ত সেই সম্বলটাও হারিয়ে ফেললো শারমিন। অথৈ সাগরে ডুবে যাওয়া জাহাজের যেন বেঁচে যাওয়া কোনো যাত্রী। যার চারপাশে, অথৈ পানি। আপন বলতে কেউ নেই।
‘প্রচুর মানুষ আমাকে দেখছিল। এখন যেমন আমাকে দেখলেই অন্ধ মনে হয়, তখন ততটা মনে হতো না। রাস্তার এক জায়গায় সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকার কারণে মানুষ বুঝতে পারলো, কোনো একটা সমস্যা। তখন অনেকেই এলো। ভিড় জমালো। আমাকে জিজ্ঞাসা করলো, এখানে এভাবে দাঁড়িয়ে আছি কেন?’- এভাবেই ওই সময়টার অনুভূতি ব্যক্ত করলো শারমিন।

শারমিন এবার লোকদের জানালো তার করুন কাহিনি। মা-বাবা নেই, দৃষ্টি শক্তি নেই। নানিও এখানে রেখে আসছে বলে আর আসেনি। শারমিনের দায়িত্ব তখন এক ব্যক্তি নিতে চাইলো। কিন্তু সে ভরসা পেলো না। তার সাথেও গেলো না। যদিও খানিক পর এক মহিলা তাকে বললো, তার কোনো বাচ্চা নেই। নিজের মেয়ের মতো করেই রাখবে। সেই মহিলা শারমিনকে নিয়ে গেলো তার বাসায়। যদিও পরে মেয়েটি বুঝতে পারে, তাকে নিয়ে আসা হয়েছে একটি বস্তি এলাকায়। যেভাবে রাখবে বলে এনেছিল, সেভাবে রাখলো না।

সেখানেই মোহাম্মদপুর আইডিয়াল কলেজের এক শিক্ষকের নজরে পড়েন শারমিন এবং তাকে সেখান থেকে নিয়ে আসেন নিজের বাসায়। ওই শিক্ষকের বাসাতেই ভালোভাবে কাটছিল শারমিনের। তবে তার তো পড়া-লেখা প্রয়োজন। চোখের আলো নেই। তাতে কি! শিক্ষার আলোয় শিক্ষিত হতে পারলে মনের আলো বেড়ে যাবে। সেই মনের আলোয় হয়তো নিজের পৃথিবীটাও আলোকিত করে তুলতে পারবে শারমিন।

এ জন্যই তাকে নিয়ে যাওয়া হয় মিরপুরে একটি অন্ধ স্কুলে। কিন্তু সেখানে ভর্তি করানো সম্ভব হয়নি। পরে নিয়ে আসা হলো, আদাবরে ইমাম ফাউন্ডেশন নামে অন্ধ মেয়েদের জন্য পরিচালিত একটি আবাসিক স্কুলে। সেখানেই আরও ২৪-২৫ জন অন্ধ মেয়ের সঙ্গী হলো শারমিন। এখান থেকেই নিজের জীবনের আলো খুঁজে নেয়ার চেষ্টা করছে চির অসহায় মেয়েটি। এখানে পড়ছে সাধারণ শিক্ষায়, পঞ্চম শ্রেণিতে।

যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শারমিনসহ ২৫-২৬টি অন্ধ মেয়ে আবাসিক হিসেবে থেকে নিজেদের পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছে, সেই প্রতিষ্ঠানের তিন তলার সিঁড়ি বেয়ে ওঠার পর ডান পাশে মোড় ঘুরতেই চোখে পড়বে পারস্য কবি ওমর খৈয়ামের বিখ্যাত সেই বাণী, ‘রুটি মদ ফুরিয়ে যাবে, প্রিয়ার কালো চোখ ঘোলাটে হয়ে আসবে, কিন্তু বইখানা অনন্ত- যৌবনা- যদি তেমন বই হয়...।’ কিন্তু আমরা চক্ষুষ্মানরা যে সব বই পড়ি, সেগুলো পড়ার কোনো সুযোগ নেই শারমিনদের। অন্ধদের জন্য তৈরি ব্রেইল পদ্ধতিতে পড়ালেখা করে তারা জাগিয়ে তুলতে চায় মনের আলো। সেই আলোয় আলোকিত করতে চায় পৃথিবীকে।

পারবে কি শারমিন আক্তার? যে ফাউন্ডেশনের তত্ত্বাবধানে এখন জীবনটা একটা স্বপ্নময় বাস্তবতার দিকে এগিয়ে চলছে, সেই ফাউন্ডেশনও চলছে মানুষের অনুদানে। যা অকেটাই অপ্রতুল। দৃষ্টিশক্তির প্রায় ৭০ থেকে ৭৫ ভাগ হারিয়ে ফেলা এক হৃদয়বান ব্যক্তি, সাইয়েদ ইমাম হাছান ইমামের ব্যক্তিগত উদ্যোগে গড়ে ওঠা ইমাম ফাউন্ডেশনের তত্ত্বাবধানে রয়েছে অন্ধ ২৬টি মেয়ে।

তাদেরকে আলো দেখানোর নিরবচ্ছিন্ন কাজ করে যাচ্ছে ফাউন্ডেশনটি। পরিচালক সাইয়েদ ইমাম হাছান ইমাম এই প্রতিষ্ঠানের অন্ধ মেয়েগুলোর বাবা, তার স্ত্রী মেয়েগুলোর মা। এমন বাবা-মায়ের তত্ত্বাবধানে থেকে শারমিনরা হয়তো অনেকদুর এগিয়ে যাবে। তবে, একই সঙ্গে সরকার এবং সমাজের হৃদয়বান ব্যক্তিদেরও তাদের এই অসাধারণ উদ্যোগের সহায়তায় এগিয়ে আসা প্রয়োজন। তাহলে হয়তো বা শারমনিদের মতো আরও অনেক অসহায় অন্ধ মেয়ে খুঁজে পাবে তাদের জীবনের আলো।

Sunday, May 13, 2018

জননেতা শহীদ আহসানউল্লাহ মাস্টার সংক্ষিপ্ত জীবনীঃ


Image may contain: Md Zahid Ahsan Russel, smiling


জননেতা শহীদ আহসানউল্লাহ মাস্টার সংক্ষিপ্ত জীবনীঃ

জননেতা শহীদ আহসানউল্লাহ মাস্টার শ্রদ্ধাঞ্জলি জননেতা শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার ছিলেন পরীক্ষিত দেশপ্রেমিক। বাংলাদেশের রাজনীতিতে তিনি ছুঁয়ে গেছেন সকল স্তরকে ও সব কিছুকে। বিশেষ করে শ্রমজীবী মানুষের মানসপটে শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার নিত্য ও সদা বিরাজমান। আজ ৭ মে জননেতা শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টারের অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৫০ সালের ৯ নভেম্বর তৎকালীন ঢাকা জেলার (বর্তমানে গাজীপুর জেলা) পুবাইল ইউনিয়নের হায়দর…াবাদ গ্রামে আহসান উল্লাহ মাস্টার জন্মগ্রহণ করেন।
আহসান উল্লাহ মাস্টারের শিক্ষাজীবন শুরু হয় নিজ গ্রামের হায়দরাবাদ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষা জীবন শেষ করে টঙ্গী হাইস্কুলে ভর্তি হন। তখন থেকেই টঙ্গীতে ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে শুরু করেন। ১৯৬২ সালে হামুদুর রহমান শিক্ষা কমিশনের বিরুদ্ধে ছাত্র আন্দোলনে রাজপথে নামে ছাত্র-ছাত্রীরা। সে সময়ে টঙ্গীতে যে আন্দোলন হয়েছিল সেই আন্দোলনে স্কুল পড়ুয়া ছাত্র আহসান উল্লাহ রাজপথে নেমে পড়েন। অংশগ্রহণ করেন মিছিলে। তখন থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত করেন। আহসান উল্লাহ ১৯৬৫ সালে টঙ্গী হাইস্কুল থেকে এসএসসি পাস করে ঢাকার লক্ষ্মীবাজারে অবস্থিত তৎকালীন কায়েদে আজম কলেজে (বর্তমান শহীদ সোহরাওয়ার্দী সরকারী কলেজ) একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি হন। ১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধুর ঘোষিত বাঙালীর মুক্তির সনদ ৬ দফা দাবি নিয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা যখন রাজপথে, তখনও ভাওয়ালের এই সন্তান আহসান উল্লাহ রাজপথের একজন সাহসী সৈনিক। রাজনীতির লড়াকু সৈনিক হিসেবে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে তার সখ্য গড়ে উঠতে থাকে। তিনি পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকে রাজনীতি চালিয়ে যেতে থাকেন। ১৯৬৮ সালে তথাকথিত আগরতলা মামলায় বাঙালীর অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অভিযুক্ত করে প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান বাঙালীর স্বাধিকার আন্দোলনকে চিরতরে স্তব্ধ করে দেওয়ার চক্রান্ত করে। ঐতিহাসিক আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা পরিচালনার জন্য তহবিল সংগ্রহ করার নিমিত্তে টঙ্গী-জয়দেবপুরের জন্য যে কমিটি গঠিত হয়েছিল, সেই কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন আহসান উল্লাহ মাস্টার। তিনি কমিটির অন্য সদস্যদের সঙ্গে ‘মুজিব তহবিল’-এর জন্য প্রতিটি কুপন ১০ পয়সা করে বিক্রয় করেন। ১৯৬৯ সালে ৬ দফা ও ১১ দফার ভিত্তিতে গণআন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। আহসান উল্লাহ ১৯৭০ সালে ডিগ্রী পাস করেন। টঙ্গীর নতুন বাজারে অবস্থিত টঙ্গী হাইস্কুল আউচপাড়ায় স্থানান্তর হওয়ার পর টঙ্গীর নোয়াগাঁও-তে এমএ মজিদ মিয়া হাই স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৬৯ সালে। এই স্কুলটি প্রতিষ্ঠার জন্য যে ক’জন শিক্ষানুরাগীর অবদান ছিল তাদের মধ্যে আহসান উল্লাহ একজন। স্কুলটির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করে প্রতিষ্ঠা ও উন্নয়নে ভূমিকা রাখেন। পরবর্তীতে তিনি ঐ স্কুলে সহকারী প্রধান শিক্ষক (১৯৭৭-১৯৮৪) ও প্রধান শিক্ষকের (১৯৮৪-২০০৪) দায়িত্ব যোগ্যতার সঙ্গে আমৃত্যু পালন করেন। ১৯৭১ সালের ১৯ মার্চ জয়দেবপুরের ক্যান্টনমেন্টের বাঙালী সৈন্যদের নিরস্ত্র করতে ঢাকা থেকে আসা পাকিস্তানী বাহিনীকে ব্যারিকেড দিয়ে বাধা দেয়ার জন্য জনতাকে উদ্বুদ্ধ করার কাজে তাঁর ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং ডাক দেন বাংলাদেশকে শত্রুমুক্ত করার। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। মুক্তিযুদ্ধে যাওয়ার আগে তিনি পাকিস্তানী বাহিনীর হাতে আটক হন এবং নির্যাতিত হন। আহত অবস্থায় আহসান উল্লাহ মাস্টার মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ভারতের দেরাদুনের তান্দুয়া থেকে গেরিলা ট্রেনিং নিয়ে ডাঙ্গা, পুবাইল, টঙ্গী, ছয়দানাসহ বিভিন্ন স্থানে গেরিলাযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ বিকেলে দেশ শত্রুমুক্ত হয় ও মুক্তিযুদ্ধের বিজয় অর্জিত হয়। আহসান উল্লাহ মাস্টারের মতো হাজার হাজার মুক্তিযোদ্ধার অবদান বাংলাদেশের ইতিহাসের পাতায় ভাস্বর হয়ে থাকবে। তিনি শিক্ষকদের নেতা ছিলেন। টঙ্গীর শিক্ষক সমিতির সভাপতি হিসেবে শিক্ষকদের ন্যায্য দাবি আদায়ের সব কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে সবার প্রিয়ভাজন হয়েছেন। কিন্তু আমাদের ট্র্যাজেডি হচ্ছে যে স্কুলে তিনি প্রধান শিক্ষক, সেই স্কুলের বিজ্ঞান ভবনের সামনে ২০০৪ সালের ৭ মে কুচক্রীমহল গুলি করে হত্যা করে তাঁকে। ঐ প্রিয় শিক্ষকের গড়া স্কুল রক্তাক্ত হলো তাঁর নিজের রক্ত দিয়ে। শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার ছিলেন জননেতা ও রাজনৈতিক নেতা এবং গণমানুষের নেতা। রাজনীতি যখন পেশী ও অর্থশক্তির হাতে বন্দী, তখন এই ব্যতিক্রমী জননেতার নীতি ও আদর্শ অনুকরণীয়। টঙ্গীর শিক্ষক সমিতির নেতা হিসেবে শিক্ষকদের ন্যায্য দাবি আদায়ের সব কার্যক্রমে সক্রিয় অংশগ্রহণ করে শিক্ষকদের কাছে প্রিয়ভাজন হয়ে ওঠেন। তাঁর ঘাতকরা বিচারিক আদালত থেকে শাস্তি পেয়েছে এবং আইনগত চূড়ান্ত রায়ের অপেক্ষায় দেশবাসী। অন্যদিকে জননেতা শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার যে অসুস্থ রাজনীতি ও অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন, সেই অসুস্থ রাজনীতির দূরীকরণ ও অপশক্তিকে সমাজ থেকে নির্মূল করা যায়নি। আজ সেই অসুস্থ রাজনীতি ও অপশক্তির বিরুদ্ধে শুভবোধের জাগরণ ঘটুক শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টারের অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকীতে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
— with Md Zahid Ahsan Russel.

আলহামদুলিল্লাহ্‌ । ৪৮ বছর পরে আবার ক্বোর'আন খতম দিলাম আজ।

আলহামদুলিল্লাহ্‌ ।
৪৮ বছর পরে আবার ক্বোর'আন খতম দিলাম আজ। অনেক ভুলত্রুটি এবং অশুদ্ধ উচ্চারন। আল্লাহ্‌ সকল ভুল ত্রুটি ক্ষমা করে তুমি তোমার দরবারে কবুল করে নিও।
তুমি এর ছোঁয়াব হযরত মোঃ (সাঃ) ও সাহাবীদের রুহের উপর বকশিস নাজিল করো;
তুমি এর ছোঁয়াব আমার কবরে শায়িত মা বাবা ও তিনটি ভাই, দাদা দাদী, নানা নানী, খালা খালু, মামা মামী ফুফা ফুফু শ্বশুর শাশুড়ি আত্মীয় পরিজন যাহারাই কবরে শূয়ে আছেন সকলের রুহের উপর বকশিস নাজিল করো। ইয়া আল্লাহ্‌ তুমি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সকলের রুহের উপর বকশিস নাজিল করো;
ইয়া আল্লাহ্‌ তুমি এর ছোঁয়াব জাতীয় ৪ নেতা ও সকল শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ৩০ লক্ষ শহীদের রুহের উপর বকশিস নাজিল করো।
আমিন ছুম্মা আমিন
No automatic alt text available.

Saturday, November 11, 2017

শেখ মুজিবের ছাত্রজীবন আদর্শ ও দেশপ্রেমের প্রতিকৃতি।

শেখ মুজিবের ছাত্রজীবন 
আদর্শ ও দেশপ্রেমের প্রতিকৃতি।  
শেখ মুজিবের ছাত্রজীবন : আদর্শ ও দেশপ্রেমের প্রতিকৃতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজীবনের স্বপ্ন ছিল বাংলার স্বাধীনতা ও বাঙালির জাতিসত্তার প্রতিষ্ঠা। শৈশব কৈশোর থেকে তিনি এই আদর্শ নিয়েই বড় হয়ে ওঠেন। নিজেই নিজেকে প্রস্তুত করে তোলেন। তাঁর এই চারিত্রিক দৃঢ়তার পেছনে ছিল গভীর অধ্যয়ন, জানা-চেনা-শোনা ও দেখার গভীর অন্তর্দৃষ্টি। তিনি হৃদয়ের আবেগকে যথেষ্টভাবে ধারণ করতে সমর্থ হন। এর পেছনে ছিল মানুষকে ভালোবাসা ও সাহায্য করার জন্য তাঁর দরদী মন। এই শিক্ষাটা তিনি অর্জন করেন তাঁর পরিবারের মানুষদের দেখে, তাঁর গৃহশিক্ষকের কাছে এবং দারিদ্র অভাবগ্রস্থ গ্রামের মানুষকে দেখে। তাঁর হৃদয়ে যা কিছু ছাপ রেখেছে বা প্রভাব ফেলেছে সেটা তিনি গভীরভাবে বিশ্লেষণ করেছেন। এই ক্ষমতা অল্প বয়স থেকেই তাঁর আয়ত্তে ছিল। তাঁকে চিন্তাচ্ছন্ন করে তুলতো, তাঁকে আবেগতাড়িত করতো। তাঁর জাতির পিতা বা বঙ্গবন্ধু হয়ে ওঠার পেছনে তাঁর গ্রাম টুঙ্গিপাড়ার মানুষের একটা বড় ভূমিকা রয়েছে। এই ছোট্ট অনুন্নত গ্রাম ও মানুষের মধ্যে তিনি লক্ষাধিক গ্রাম ও কয়েক কোটি মানুষকেও দেখেছেন। আর সেজন্যই বাঙালি জাতির ভাগ্যকে তিনি জয় করতে গিয়ে তিনি নিজের জীবনের প্রতি তাকিয়ে দেখার সুযোগ পান নি। জেল-জুলুম, রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র, শাসকগোষ্টীর অত্যাচার– সবকিছু সহ্য করেছেন। কিন্তু বাংলার মানুষের সঙ্গে কখনও বিশ্বাসঘাতকতা করেননি। তাঁর লক্ষ্য ছিল বাংলার মানুষের মুক্তি। বাঙালি উন্নত জীবনের অধিকারী হোক। বিশ্বে মাথা উচু করে দাঁড়াক। বাঙালি জাতিসত্তাকে প্রতিষ্ঠা করুক। একজন মহান নেতা হবার সবকটি গুণই আমরা তার মধ্যে খুঁজে পাই। ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ টুঙ্গিপাড়ায় শেখ মুজিবের জন্ম হয়। মা-বাবার চোখের মণি, ভাই-বোনের আদর ভালোবাসা, আত্মীয়-স্বজন পাড়া-প্রতিবেশি সকলের কাছেই ছিল তার সমাদর। গ্রামের মাটি-আলো-বাতাসের স্পর্শ নিয়ে প্রকৃতির শান্ত শীতল সবুজ ছবিটি দেখে তিনি বড় হয়ে উঠলেন। গিমাডাঙ্গা প্রাইমারি স্কুলে লেখাপড়া করেন। বাড়িতে লেখাপড়ার জন্য শিক্ষক, মৌলভী ও পণ্ডিত ছিলেন। গ্রাম থেকে গোপালগঞ্জ শহরে এসে মিশন স্কুলে ভর্তি হন। পিতা ছিলেন গোপালগঞ্জ দেওয়ানী কোর্টের সেরেস্তাদার। স্কুল ছাত্রজীবনেই তাঁর চোখে বেরিবেরি রোগ হওয়ায় কলকাতায় গিয়ে ডা. টি. আহমদের কাছে অস্ত্রপচার করতে হয়। দুই বছর লেখাপড়া বন্ধ ছিল। এ সময়টায় তিনি ঘুরে বেড়াতেন, সভায় গিয়ে বক্তৃতা শুনতেন, গৃহশিক্ষকের কাছে অনেক কথা কাহিনী ও খবরাখবর শুনতেন। সুস্থ হওয়ার পর তিনি আবার স্কুলে ভর্তি হন, খেলাধুলায়ও মনোযোগী হন। ফুটবল ছিল প্রিয়। স্কুলের দলের হয়ে খেলতেন। লেখাপড়া করতেন ঠিক মত, কেননা তাঁর মা-বাবার প্রচন্ড উৎসাহ ছিল এবং তীক্ষ্ণ দৃষ্টি ছিল, শাসনও ছিল। তাঁর গৃহশিক্ষক কাজী আবদুল হামিদ ছিলেন একজন ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের কর্মী যিনি আত্মগোপন করতে তাদের বাসায় আশ্রয় নেন। সেই শিক্ষকই শেখ মুজিবের জীবনকে আলোকিত করার প্রথম প্রদীপটি জ্বালান। তিনি তাঁকে ইতিহাসের শাসকদের গল্প শোনান। বিপ্লব-বিদ্রোহের কাহিনী শোনান। বাংলার ইতিহাস কিশোর মুজিবের কাছে ছিল এক আদর্শময় পাঠ। বাঙালির কৃতিত্ব, শিল্প–সাহিত্য-সংস্কৃতির জ্ঞানও তিনি ধীরে ধীরে গ্রহণ করেন। এই শিক্ষা গ্রহণ করার পাশাপাশি সেই সময়ের বৃটিশ শাসকদের শাসন ও শোষণ, গান্ধিজীর আন্দোলন, হিন্দু-মুসলমান সম্পর্ক, রাজনৈতিক আন্দোলন, সামাজিক সমস্যাবলী, বন্যা-দুর্ভিক্ষ, খাদ্যাভাব – সবই তিনি তাঁর গভীর পর্যবেক্ষণ শক্তি দিয়ে বিশ্লেষণ করেছেন। স্কুল ছাত্র জীবনেই তিনি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। যারা রাজনীতি করতেন তাদের খুব কাছাকাছি চলে যান। ঐ সময়ে বাংলার প্রধানমন্ত্রী এ. কে. ফজলুল হক ও মন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী গোপালগঞ্জে রাজনৈতিক সফরে এলে তিনি তাঁদের সামনে গিয়ে স্কুলের ছাদ দিয়ে পানি পড়ার অভিযোগ তুলে ধরেন এবং মেরামতের দাবি জানান। তাঁর কথা বলার ভঙ্গি দেখে দুই নেতাই মুগ্ধ হন। সোহরাওয়ার্দী তাঁকে কাছে ডেকে কথা বলেন এবং এলাকার রাজনৈতিক খবরাখবর নেন। তিনি ঠিকানা দিয়ে চিঠি লিখতেও বলেন। শেখ মুজিবের সঙ্গে সেই প্রথম সম্পর্ক গড়ে ওঠে যা আজীবন ছিল। সোহরাওয়ার্দীর রাজনৈতিক আদর্শ শিষ্য হিসেবে শেখ মুজিব গড়ে উঠতে থাকেন। সেই সফরে সম্বর্ধনা জানাতে একটি কমিটি গঠিত হয়। পরবর্তীতে সেই কমিটির একটি গোলমালের ঘটনায় শেখ মুজিবসহ চার পাঁচজনকে আসামী করে বিরোধীরা থানায় একটি মামলা করে। গোপালগঞ্জ থানা হাজতে সাতদিন বন্দি থেকে জামিনে মুক্তিলাভ করেন। পরবর্তীতে ১৫০০ টাকা ক্ষতিপূরণ দিলে মামলা প্রত্যাহার করে নেয়া হয়।


সেই তাঁর প্রথম কারাজীবন এবং এটাও তাঁর জীবনে গভীরভাবে প্রভাব ফেলে। ১৯৪২ সালে এন্ট্রান্স পাশ করে শেখ মুজিব কলকাতায় ইসলামিয়া কলেজে ভর্তি হন। বৃটিশ শাসিত দুই বাংলা একত্রে বাংলা বা বেঙ্গল হিসেবে পরিচিত ছিল। বাংলার মেধাবী, মননশীল ছাত্ররা ইসলামিয়া কলেজে লেখাপড়া করতো এবং বেকার হোস্টেলে থাকতো। ১৯২৬ সালে ইসলামিয়া কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৪৭ সালে এর নামকরণ হয় সেন্ট্রাল কলকাতা কলেজ। ১৯৬০ সালে উপমহাদেশের প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ মাওলানা আবুল কালাম আজাদের নামে রাখা হয়। বর্তমানে মাওলানা আজাদ কলেজ নামে পরিচিত। শেখ মুজিব এখান থেকে ১৯৪৪ সালে আই.এ. এবং ১৯৪৭ সালে বি.এ. পাশ করেন। কলেজের পাশের রাস্তায় তালতলা থানার কাছেই বেকার হোস্টেল। তিনতলা বিরাট ভবন। শেখ মুজিব তিনতলার বাঁদিকের সামনের সারির কোনায় ২৪নং কক্ষে থাকতেন। ছোট্ট কক্ষ, কোন ফ্যান ছিল না তখন। একটি ছোট্ট খাট। পাশেই কাঠের তৈরি পড়ার টেবিল ও চেয়ার। একটি ছোট্ট আলমারীও আছে। বর্তমানে এটি বঙ্গবন্ধু স্মৃতি কক্ষ নামে পরিচিত। তাঁর ছবি ও তাঁর সম্পর্কিত লেখা বইয়ের একটি আলমারিও আছে। পাশের ২৫ নম্বর কক্ষটিও এর সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর একটি ভাস্কর্য রাখা হয়েছে। দরোজার পাশে দেয়ালে বঙ্গবন্ধুর একটি সংক্ষিপ্ত জীবনীও রাখা হয়েছে। পাশাপাশি এই দুটি কক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও তাঁর সঙ্গীসাথীরাও থাকতেন। সারাদেশ থেকে তাঁর ছাত্র রাজনীতির কর্মী, ভক্ত ও অনুরাগীরা এসে দেখা করতো এখানেই। অনেক সভা করেছেন হোস্টেলে। হোস্টেল সুপার ছিলেন অধ্যাপক সাঈদুর রহমান। ছাত্র-কর্মীদের থাকার জন্য শেখ মুজিব খালি রুম বা বড় হলঘর চাইলেই তিনি কখনও না করতেন না। শেখ মুজিবের প্রতি তাঁর একটা আলাদা স্নেহ-ভালোবাসা ছিল। ইসলামিয়া কলেজের প্রিন্সিপ্যাল ছিলেন ড. এইচ. আর. জুবিরী। 
শেখ মুজিবের প্রতি তাঁর ছিল অপার স্নেহ। বিশেষ করে বি.এ. পরীক্ষায় বসার জন্য তিনি তাঁকে সবরকম সহযোগিতা করেছিলেন। কেননা দাঙ্গা-হাঙ্গামা, পুনর্বাসন ইত্যাদি কর্মকান্ডে শেখ মুজিব তখন ব্যস্ত থাকতেন। মুসলিম লীগের রাজনীতির সঙ্গেও ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন। একদিকে ছাত্রনেতা হিসেবে বলিষ্ঠ সংগঠক ছিলেন, অপরদিকে মুসলিম লীগের ড্রইংরুম রাজনীতিকে সাধারণের মাঝে নিয়ে আসার কাজে তিনি সোহরাওয়ার্দী ও আবুল হাশেমের যোগ্য শিষ্য ছিলেন। বেকার হোস্টেলের ছাত্র সংসদের নেতৃত্বও তিনি নিয়ন্ত্রণ করতেন এবং একবার সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন। শিক্ষক ও ছাত্র সকলের প্রিয় ছিলেন শেখ মুজিব। তাঁর আদর্শ, সাহস ও চিন্তা-ভাবনার প্রতি সকলের শ্রদ্ধা ছিল। স্কুল ছাত্রজীবন থেকেই শেখ মুজিব দেশের রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৩৮ সালে মুসলিম লীগের ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি হিসেবে সিরাজগঞ্জে প্রাদেশিক মুসলিম লীগের সম্মেলনে যোগদান করে যথেষ্ট অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। এ সম্মেলনে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহসহ ভারতের বড় বড় নেতৃবৃন্দ যোগদান করেন। এছাড়াও দিল্লীতে ভারতীয় মুসলিম লীগের সাধারণ সম্মেলনে তিনি দুইবার যোগদান করেন। 


সেখানেও নেতাদের ভাষণ শুনে তিনি অনুপ্রাণিত হন। কলকাতায় ছাত্রাবস্থায় তিনি দাঙ্গা দেখেছেন ও রুখেছেন। ১৯৪৬ সালের সাধারণ নির্বাচনেও তাঁর ভূমিকা ছিল। ছাত্রজীবন থেকেই দেশপ্রেম ও দেশের জন্য কাজ করা তাঁর স্বভাবের অংশ হয়ে ওঠে। ছাত্রজীবনে তাঁর কর্মকাণ্ড, বিচক্ষণতা ও ভাষণ শুনে সবাই আকৃষ্ট হতো। ১৯৪৭ সালের ডিসেম্বরে শেখ মুজিব ঢাকায় এসে ১৪০নং মোগলটুলীর ‘কর্মী-ক্যাম্পে’ ওঠেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ভর্তি হন এবং সলিমুল্লাহ হলে মাঝে মাঝে থাকতেন। 
ঢাকায় এসে ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন এবং মুসলিম ছাত্রলীগের স্বেচ্ছাচারিতা ও বাংলা বিরোধী ভূমিকার জন্য তাদের সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করেন। তিনি পূর্ব বাংলা মুসলিম ছাত্রলীগ গঠন করেন। যুবলীগেরও একজন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন। খাজা নাজিমুদ্দিনের বাংলাভাষাবিরোধী ভূমিকা এবং উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার হুমকির বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সমাজ যখন গর্জে ওঠে, তিনিও তাদের সঙ্গে নেতৃত্ব দেন। ১৯৪৮ সালে প্রথম প্রতিবাদ ও হরতাল পালিত হলে শেখ মুজিবও সবার সঙ্গে গ্রেফতার হন। পরে পূর্ব বাংলার মূখ্যমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিন ছাত্রদের দাবি মেনে নিয়ে সবাইকে মুক্তি দেন। এরপর শেখ মুজিব কৃষকদের দাবি নিয়ে আন্দোলন করেন। তারপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর দাবি দাওয়া নিয়ে আন্দোলন করেন। এসময় উপাচার্যের বাড়ি ঘেরাও কালে তাঁকেও পুলিশ গ্রেফতার করে এবং অনেকগুলো মামলা দায়ের করে। কারাগারে থাকার সময় তিনি আওয়ামী মুসলিম লীগের যুগ্ম-সম্পাদক নির্বাচিত হন। জেল থেকে বের হয়ে এক ছাত্রসভায় বক্তৃতা দিয়ে তিনি ছাত্র রাজনীতি থেকে বিদায় নেন এবং জাতীয় রাজনীতিতে যোগদান করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাঁকে বহিস্কার করা হয়েছিল। জেলে থাকাকালে সরকার তাঁকে জরিমানা ও মুচলেকার প্রস্তাব দেয় এবং জানায় তিনি যদি রাজনীতি না করেন, তাহলে ছাত্রত্ব ফিরিয়ে দেয়া হবে। তিনি সরকারি প্রস্তাব প্রত্যাখান করেছিলেন। 

কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে শেখ মুজিব টুঙ্গিপাড়ায় গ্রামের বাড়িতে কিছুদিন অবস্থান করেন। তাঁর পিতা শেখ লুৎফর রহমান তাঁকে লন্ডনে গিয়ে ব্যারিস্টারি পড়তে বলেন। কিন্তু শেখ মুজিব ততদিনে পাকিস্তানের শাসকদের ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তকে অনুধাবন করে ফেলেন। তিনি তাঁর প্রিয় বাংলার জনগণকে পাকিস্তানের শোষণের মধ্যে ফেলে রেখে লন্ডনে গিয়ে আর পড়তে চাইলেন না। তিনি রাজনীতি করার সদিচ্ছা প্রকাশ করে বাংলার মানুষের আদায়ের দাবিতে আবার ঢাকা চলে এলেন। তাঁর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা জীবনের ইতি ঘটে। কিন্তু ঘরে বসে বই পড়ার অভ্যাস থাকায় তিনি একটি লাইব্রেরি গড়ে তোলেন। স্বচ্ছ মনের মানুষ ছিলেন, রাজনৈতিক চিন্তার দিক থেকে দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ছিলেন, সাহসী, সৎ ও দৃঢ় চারিত্রিক আদর্শের অধিকারী ছিলেন। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর আতঙ্ক ছিলেন একমাত্র শেখ মুজিব। মন্ত্রীত্বের লোভ, লাইসেন্সের টোপ এবং ব্যবসা-বানিজ্যের নানা সুযোগ সুবিধা দিয়ে তখন অনেক নেতাকে ক্রয় করা যেত। কিন্তু শেখ মুজিব তাঁর লক্ষ্যে দৃঢ় ছিলেন। জেল-জুলুম মামলা–ফাঁসির ভয় তাঁর মাথা নত করতে দেয়নি। বাংলার মানুষের মুক্তির দাবিতে, অধিকার আদায়ে, শোষণের বিরুদ্ধে তিনিই ছিলেন সোচ্চার প্রতিবাদী। তাঁর বজ্রকন্ঠ পাকিস্তানের ভিত কাঁপিয়ে দিয়েছিল। দেশ ও মানুষকে তিনি তাঁর হৃদয়ের আধেয় করে একজন আত্মত্যাগী দেশপ্রেমিক নেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে সমর্থ হন। ছাত্রজীবন থেকে যে শিক্ষা ও দীক্ষা তাঁর জীবনকে আলোকিত করে তোলে, তার শিখা চিরন্তন করে রেখে গেছেন তিনি।

Friday, November 10, 2017

উত্তর চাই দেশবাসীর নিকট

https://liberationwar1971.blogspot.com/


মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী ও আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ডঃ আব্দুস সোবহান গোলাপ তার বিজনেস কার্ডে লিখেছেন তিনি চাদপাড়া ও ব্যারাকপুরের মুক্তিযোদ্ধা। আমিও চাদপাড়া ও ব্যারাকপুরের মুক্তিযোদ্ধা। ডঃ গোলাপ ক্ষমতায় বলে স্বীকৃতি পাবে আর আমি ক্ষমতা নেই বলে মন্ত্রীর অপমান সহ্য করবো? তাতো হয় না মাননীয় প্রধানমন্ত্রী? এক মায়ের পেটে হিন্দু মুসলিমের জন্ম হয় না। হয় দুইজনই হিন্দু নয়তো দুইজনই মুসলমান। এ প্রশ্ন আ ক ম মোজাম্মেল হককে করেছিলাম। সে মালদ্বীপে বলে গিয়েছে যে গোলাপ মুক্তিযোদ্ধা ছিল না। তাহলে সে মুক্তিযোদ্ধার সনদ কোথায় পেল? মন্ত্রী কোন উত্তর দেয়নি।

Tuesday, May 23, 2017

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী

SUPPORT AWAMI LEAGUE, VOTE NOUKA ONCE AGAIN
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমি বিশেষ্য বিশেষন দিয়ে তোষামোদি করতে জানিনা। তাই সরাসরি আমার কিছু না বলা কথা এবং কিছু হতভাগা মুক্তিযোদ্ধাদের করুন ইতিহাস আপনার সদয় অবগতির জন্য মিডিয়ার সাহায্য নিতে বাধ্য হলাম।
আপা, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। মুজিবনগরে প্রশিক্ষণ নেয়া যোদ্ধা।
  স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশে ১৯৭২ সালের ২রা মার্চ জাতিরজনক বংগবন্ধু/বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী শহীদ তাজুদ্দিন আহমেদ একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবেই ১০ মিনিটের নির্দেশে ভূমি মন্ত্রণালয়ে চাকুরী প্রদান করেছিলেন। ৭ দিন কি ৮ দিন পায়ে হেটে না খেয়ে মুজিবনগরে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিয়েছিলাম একটি স্বাধীন সার্বভৌম জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার নেশায়।

এ নেশা সাড়ে সাত কোটি মানুষের রক্তে মাংসে অস্তিত্বে মগজে সেলের মত বিধেছিল ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ "পশ্চিমা হানাদার বাহিনীর হাত থেকে বাংলাকে মুক্ত করতে হবে" জাতিরজনকের এই উদাত্ত আহবানে সারা দেয়া কী ভুল সিদ্ধান্ত ছিল? তাই আমি মুক্তিযোদ্ধা। নামবিহীন অস্তিত্ববিহীন মুক্তিযোদ্ধা! নাম বদলে দিলাম। মোঃ মোকতেল হোসেন থেকে নাম বদলে হয়ে গেলাম মোকতেল হোসেন মুক্তি।
পরবর্তীতে জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু ১৩ই এপ্রিল ১৯৭২ সালে মন্ত্রী পরিষদ গঠন করে প্রধানমন্ত্রী হলে মাদারীপুরের কৃতি সন্তান মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক খাদ্যমন্ত্রী প্রয়াত ফনি ভূষন মজুমদারের অনুস্বাক্ষরে বঙ্গবন্ধু প্রধানমন্ত্রী ত্রাণ তহবীল থেকে এক হাজার টাকার অনুমোদন (মাদারীপুর মহকুমা প্রশাসক অফিসে) এবং ৩ বান ঢেউ টিন প্রদান করেন।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের কর্মচারীদের রেকর্ডে একজন মুক্তিযোদ্ধার কোটায় আমার চাকুরী হয়েছিল। স্বাধীন বাংলাদেশের সচিবালয়ে আমিই ভূমি মন্ত্রণালয়ের প্রথম নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মচারী ছিলাম। আমার ডিউটি ছিল জননেত্রী শেখ হাসিনার ফুফা, বঙ্গবন্ধুর ভগ্নিপতি, সাবেক চীপ হুইপ আলহাজ্ব হাসনাত আব্দুল্লাহ সেরনিয়াবাত এর গর্বিত পিতা, যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা শেখ ফজলুল হক মনি ভাইয়ের শ্বশুর, সাংসদ ব্যারিষ্ঠার তাপসের নানা সাবেক কৃষক লীগের সভাপতি ভুমি মন্ত্রী ও পরবর্তীতে পানি সম্পদ মন্ত্রী শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাতের বাসায়।
ইতিহাসের ঘৃণ্য কালো অধ্যায় ১৫ঈ আগস্টের মধ্যযূগীয় বর্বর হত্যাকান্ডের লাশ দেখে আমি পাগল হয়ে যাই। পিজি হাসপাতালে আমার ৩ মাস চিকিতসা চলে এবং সে তিন মাসের বেতন ভূমি মন্ত্রণালয় কর্তন করে। এ কথা সকলেই জানেন।
আমি ভারতের প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা। আমার ঘরের সব কাগজপত্র আমার ভাইদের শিক্ষার সনদ, জমির দলিল দস্তাফেজ সমূহ সব মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ছিড়ে ফেলি। আমার পরিবারের সব আমি ধংস করে ফেলেছিলাম। ভুমি মন্ত্রনালয় তার প্রমান।
আমি মন্ত্রীকে এসব কথা বলাতে আমাকে অপমান করতে পারেন না। আমি প্রবাসে থাকি। আমাকে আবেদনের সুযোগ না দিয়ে অপমান করার অধিকার মন্ত্রীর নাই। তিনি আমার দরখাস্ত গ্রহন করা ও না করার অধিকার রাখেন কিন্তু মেজর জেনারেল সুবিদ আলীর নির্দেশে  আমাকে অপমান করতে পারেন না। তিনি আমার আবেদনে লিখেছেন
“যেহেতু আবেদনকারী বহুবার দেশে এসেছিলেন এবং আবেদন করেন নি তাই তার আবেদন গ্রহন করা গেল না”
তিনি মেজর জেনারেল সুবিদ আলীর শিখানো কথা মত বললেনঃ ৪৫ বছর পরে মুক্তিযোদ্ধা হতে এসেছে। বের করে দেন”।
আমি মুক্তিযোদ্ধাই নই, একজন সক্রিয় আওয়ামি যোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধ ছাড়া আমার জীবনে অন্য কোন বিষয় কাজ করেনি এবং এ মুক্তিযুদ্ধ বংগবন্ধ ও আওয়ামী লীগই আমার ধ্যান ধারনা চিন্তা চেতনা আদর্শ এ কথা প্রমান করে আমার ৬০ হাজার প্রায় লীফলেটস, ব্যানার ও পোষ্টার এশিয়ায় ইন্টারনেট চালু হবার পর থেকেই কার বিনা প্ররোচনায় করে এসেছি। শুধু তাই নয় আমি ২০০ ওয়েব সাইট ও ব্লগ মেইনটেইন করি যা’শুধু যুদ্ধাপরাধী মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগ সংক্রান্ত। এ সকল ছবি ও ব্লগ/ওয়েবসাইটগুলোই প্রমান করে যে আমি মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে রীতিমত একজন বদ্ধ উন্মাদসম গবেষক।
Just write my name on the google search engine where you’ll get real Identity of mine “write Moktel Hossain Mukthi or muktimusician.
এ ছাড়াও আমি একজন একনিষ্ঠ অনলাইন আওয়ামী যোদ্ধা। মালদ্বীপের বঙ্গবন্ধু পরিষদ এবং আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি, মালদ্বীপের মাটিতে আমিই সর্ব প্রথম মুক্তিযুদ্ধ বঙ্গবন্ধু এবং পাকিস্তানের ৩০ লক্ষ বাঙ্গালী হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য জনসভায় বক্তৃতা প্রদান করে পাকিস্তান হাই কমিশনের মামলা খাওয়া একজন মালদ্বীপ সরকারের শিক্ষক।
মন্ত্রী মহোদয় এ সব পরিচয় জানার পরেও বলেন নি যে আপনি বসেন বা কিছু বরং তাঁর আচার ব্যবহার এতই রুঢ় ছিল যা’ শিবির বা জামাতের কারো সাথে করছেন বলে অনুমেয়। আমার সাথে ভদ্র ভাষায় কথাও বলেন নি। এক পর্যায়ে জেনারেল সুবিদ আলীর কথায় তিনি আমাকে ঘাড় ধরে তাঁর কক্ষ থেকে বেড় করে দেয়ার কথা বলেন এবং অতঃপর.........।।
তিনি মন্ত্রী না হলে হয়তো সেখানেই কোন দুর্ঘটনা ঘটে যেতো। আমি আমার নিজেকে নিয়ন্ত্রন করে চলে আসি। আমার সহযোদ্ধারা এখনো অনেকেই বেচে আছেন। ড: গোলাপ আমার সাথের একই ক্যাম্পের যোদ্ধা। আওয়ামি যোদ্ধা।  
মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী সব সময় প্রচন্ড মিথ্যা কথা বলেন। যা' মিডিয়া ও বক্তৃতায় বলেন, বাস্তবের সাথে তার কোন মিল নেই; তিনি যা বলেন সব মিথ্যা কথা মিথ্যা তথ্য। এখনো বহু আসল মুক্তিযোদ্ধার নাম তালিকাভুক্ত করতে পারেনি অথচ তিনি বক্তৃতায় ঘোষনা করলেন সকল জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের কথা রেকর্ড করা হবে। আসল অনেক মুক্তিযোদ্ধার নামই সংগ্রহ করতে পারেন নি-তিনি কিভাবে এ ঘোষনা প্রদান করেন?   
তার দেয়া সব তথ্য জাতিকে বিভক্ত করছে; মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কলঙ্কিত হচ্ছে। নতুন তালিকা প্রণয়নের নামে এগুলো প্রতারণা। মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী মিথ্যাচার করছেন। মিডিয়া, দেশবাসী এমন কি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে প্রতারণা করছেন । দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে উপজেলা ও জেলাসমূহে যে দুর্নীতি চলছে, যে সনদ ও মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাইয়ের নামে ব্যবসা বাণিজ্য শুরু হয়েছে তাতে আওয়ামী লীগের বিগত বছরগুলোর সকল সফলতা এমন কি মহান মুক্তিযুদ্ধে আওয়ামী লীগের যে অবদান সব মলিন হয়ে যাবে এই মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীদের মত স্বজনপ্রীতি দুর্নীতি গ্রস্থ নেতা/কমান্ডারদের কারনে।
কারন আপনি আদর্শিক কারনে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংরক্ষন ও মুক্তিযোদ্ধাদের মূল্যায়ন করছেন।  সমস্ত মন্ত্রী এম পি দের তৃনমূলের সাথে কোন সম্পর্ক নেই। ক্ষমতা ও অর্থ সম্পদ শালী মধ্য শ্রেণীর নেতা যার মধ্যে অর্ধেকই প্রায় জামাত শিবির ও বি এন পি, তাদের সাথে তাল মিলিয়ে, হাত মিলিয়ে আমার মত পাগল ছাগল নিবেদিত ত্যাগি সৎ নিষ্ঠাবান অভিজ্ঞ উচিত কথাবলার প্রকৃত মুক্তিসেনাদের এভাবেই তারা অপমান তাচ্ছিল্য করে দূরে সরিয়ে রাখে। যে কারনে ছাত্রলীগের ছেলেদের সেনাবাহিনী নৌ বাহিনী বিমান বাহিনী পুলিশ বিজিবি ও অন্যান্য সরকারী ভালো পদে চাকুরী হয় না।
কারন ওরা ত টাকা দিতে পারবে না। দলীয় ছাত্র লীগের ছেলেদের নিকট টাকা চাইতেও পারে না; যদি আবার নেত্রীকে বলে দেয় বা জানিয়ে দেয়। তাই গোপনে আওয়ামী লীগের নেত্রীর বিশ্বাসী নেতাগন গোপনে চাকুরী প্রদান করে, স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র ছাত্রীদের ভর্তির সুপারিশ ও তদবীর করে জামাত বি এন পির ছেলে মেয়েদের । কারন টাকা পাওয়া যাবে।
উত্তরা ও এয়ারপোর্ট থানা এলাকায় আমার বাস। আমার জানা মতে ঠিক আমারই মত ত্যাগি জীবনবাজী রেখে নৌকার জন্য ভোট সংগ্রহ কারীর একটি মেয়েকে বঙ্গ মাতা স্কুলে ভর্তির জন্য কি না করেছে? মায়া ভাই পর্যন্ত বিষয়টি জানতেন। সে মেয়েটি সুযোগ পায়নি; দেখা গেছে-ঢাকা এয়ারপোর্ট ও বিমানে চাকুরীরত জামাত বি এন পির ছেলে মেয়েরা অজানা রহস্যের কারনে সবাই সুযোগ পেয়ে গিয়েছে।
এর নাম স্বাধীনতা ? মুক্তিযুদ্ধ ? আওয়ামী লীগ ? এত সে বঙ্গবন্ধুর নৌকা ডুবানোর দুরদন্ত শয়তানী মাঝি খন্দকার মোস্তাক আহমেদ, শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, চাষী মাহবুবুল আলম, নূরুল ইসলাম, কে এম ওবায়দুর রহমান তাহের উদ্দিন ঠাকুরদের চেয়ে একটূ কম নয়। আমিই হলাম বাঙ্গালী জাতির মধ্যে সবচেয়ে কুলাঙ্গার। ধিক্রিত অবহেলিত লাঞ্ছিত মূর্খ বেয়াকুপ বেয়াক্কেল আহাম্মদ বোকা গাধা । না পারলাম প্রাণ খুলে হাসতে না পারলাম দুটি কন্যা সন্তানকে প্রাণ খুলে হাসতে। কি লাভ হল? এ স্বাধীনতায়? যে স্বাধীনতা আমার অস্তিত্বকে স্বীকৃতি দেয় না; সে স্বাধীনতাকে আমি কেন স্বীকৃতি দেব? রাষ্ট্রই যদি আমাকে নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি না দেয়, আমি কেন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেবো? কেউ দেবে না। এটাই নিয়ম, এটাই লজিক। জানি আমি এতে হবো রাষ্ট্রদ্রোহী। তাও মন্দ কী? একটা কিছু ত হবো? আওয়ামী লীগের একজন মন্ত্রী একজন মুক্তিযোদ্ধাকে ঘাড় ধরে বেড় করে দেয়?? এ স্বাধীনতার অর্থ কী? কেন পেলাম? কি আশায় স্বাধীন হলাম? কিসের নেশায় নৌকা নৌকা মুজিব মুজিব করে জীবনের শেষ অবস্থানটুকুকে ধূলিসাৎ করে দিয়ে নির্বাসিত হলাম এই দ্বীপ রাজ্য মালদ্বীপে । ভুল কোথায়? ভুল তো আছেই হয়তো জানিনা জীবনের কোথায় কোন সিদ্ধান্তে বড় রকমের ভুল ছিল। তাই ভুলের মাশুল দিয়ে গেলাম ৬৫ বছর বয়সের মুক্তিযোদ্ধা মোকতেল হোসেন মুক্তি।


ভুল তথ্য দিচ্ছেন। এর সমাধান চাই। এর একটি পরিস্কার ব্যাখ্যা চাই; সত্যের জয় হবে; তাই চাই; জাতিরজনকের নাম ভাঙ্গিয়ে কেউ ক্ষমতায় থেকে বঙ্গবন্ধুর সৈনিকদের নিয়ে রঙ তামাশা করবে; মুক্তিযোদ্ধা নির্ধারণের নামে ব্যবসা করবে, এর জন্য যুদ্ধে যাইনি, এর জন্য ৩০ লক্ষ বাঙ্গালী শহীদ হয়নি; এর জন্য ২ লক্ষ ৪০ হাজার মা বোনের ইজ্জত হারায়নি। আসল মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকাই করতে ব্যর্থ মোজাম্মেল হক।
এই মিথ্যাচারের জন্য আল্লাহ্‌ বিচার করবেন রোজ হাসরের দিন। মহান আল্লাহর বিচারে কারো হাত নেই। আল্লাহর উপরে কোন মন্ত্রী নেই; আল্লাহর উপরে বিচারক নেই; রোজ হাসরের থেকে শক্তিশালী ক্ষমতাবান কোন আদালত নেই। বহু আসল মুক্তিযোদ্ধা এখনো তালিকার বাইরে এবং এ সমস্যা আগামী ১০০ বছরেও কোন সরকার সমাধান করতে পারবে না। ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের কথা রেকর্ড হবে ।
মন্ত্রী নিজেও জানে না যে উপজেলা জেলা গুলোতে এই তালিকা নিয়ে কি পরিমান টাকার ছাড়াছড়ি চলছে? কি পরিমান ব্যবসা করছে নব্য থানা কমান্ডারগণ। এমন কোন উপজেলা নেই যেখানে সত্যকারের মুক্তিযোদ্ধা বাদ পড়ে নাই এবং ভূয়া মিথ্যা তথ্য প্রদানকারী মন্ত্রীর ক্ষমতা বলে নয়তো এম পির ক্ষমতা বলে অথবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ক্ষমতা বলে নতুন তালিকায় নাম লিখিয়েছে। এমন প্রমান আমার গ্রামে আমার ইউনিয়নে রয়েছে। আমি ত অন্যের ক্কথা শূনে এ সব লিখিনি ভাই।ফুরিয়ে যাচ্ছে ৭১ এর সোনার ছেলে মেয়েরা, বেচে থাকবে শুধু ৭১ এ জন্ম নেয়া নব্য মুক্তিযোদ্ধারা, যারা লক্ষ টাকায় মুক্তিযুদ্ধের সনদ কিনে মুক্তিযোদ্ধা হয়েছে। আমরা মুজিবনগরে (ভারতে) প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা এর চেয়ে বড় পরিচয়ের প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না। মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ডঃ আব্দুস সোবহান গোলাপ ভারতের চাদপাড়া এবং পরবর্তীতে ব্যারাকপুর মুক্তিযোদ্ধা প্রশিক্ষণ শিবিরে প্রশিক্ষণ নেয়া মুক্তিযোদ্ধা এবং আমরাও একই সময়ে একই শিবিরে একই কমান্ডারের অধীন প্রশিক্ষণ নেয়া মুক্তিযোদ্ধা। ডঃ আব্দুস সোবহান গোলাপের নাম যদি মুক্তিযোদ্ধা সংসদের তালিকায় থাকতে পারে, তবে আমাদের নাম থাকবে না কেন? শুধু আমরা নই, সারা বাংলাদেশে বহু অখ্যাত অপরিচিত অশিক্ষিত অজো পাড়া গায়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বহু প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের নাম এখনো তালিকাভুক্ত হয়নি। বহু মুক্তিযোদ্ধা ইতোমধ্যেই পরলোকগমন করেছেন, কোন স্বীকৃতি ও সুযোগ সুবিধা ভোগ না করেই তারা চলে গেছেন বাঙ্গালী জাতিকে মহান স্বাধীনতা প্রদান করে। তাদের নাম কে তালিকাভুক্ত করবে? কেন একটি সঠিক তদন্ত কমিটি কর্তৃক সারা দেশে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা করা হয়নি? এ প্রশ্ন সরকার ও দেশবাসীর কাছে। আমরা মনে করি মহান মুক্তিযুদ্ধের নেত্রিত্বদানকারী দল হিসেবে জাতিরজনক বংগবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সরকারের এ মহান দায়িত্ব মুক্তিযোদ্ধাদের জীবদ্ধশায় সম্পন্ন করা উচিত। সবাই শেয়ার করুন, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সত্যিকারে শ্রদ্ধা থাকে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে মুক্তির খোলা চিঠি
আমার সার্টিফিকেট দরকার নাই। কোন ভাতার দরকার নাই। আপনি মুসলমান দাবী করলে আমি কেন করবো না? আমিও তো  নামাজ পড়ি? মন্ত্রী আমাকে অপমান করতে পারে না। তার চেয়ে আওয়ামী লীগের জন্য আমার অবদান সেই ৬৯ থেকে অদ্যাবধি তিল পরিমান কম নয়; বঙ্গবন্ধু আমাকে চাকুরী দিয়েছিলেন সচিবালয়ে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে। অমুক্তিযোদ্ধা ভাতা পায় এবং তা আওয়ামী লীগের আমলে এবং আওয়ামী লীগের মন্ত্রীর স্বাক্ষরে কেন? আমার কি ইচ্ছে করে না যে আমার সন্তান মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হোক। আমার সন্তানের কি ইচ্ছে করে না, তার বাবা মুক্কতিযোদ্ধা এ কথা অন্য দশজনের নিকট বলে গৌরব বোধ করতে? মন্ত্রীর ইচ্ছে মত চলতে পারে না; এ সব তথ্য নেত্রীর জানা দরকার।
নিবেদক - মোকতেল হোসেন মুক্তি, কন্ঠশিল্পী মুক্তিযোদ্ধা,
প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, সময়৭১।
মালদ্বীপ আওয়ামী লীগ
বঙ্গবন্ধু পরিষদ, মালদ্বীপ শাখা
সাধারণ সম্পাদক
মালদ্বীপস্থ প্রবাসী বাংলাদেশী কমিউনিটি এসোসিয়েশন
সুরকার গীতিকার ও সঙ্গীত পরিচালক
সঙ্গীত শিক্ষক
জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু ।

Friday, April 28, 2017

যেভাবে বাংলাদেশে ইসলামী জঙ্গিদের উত্থান


যেভাবে বাংলাদেশে ইসলামী জঙ্গিদের উত্থান
রণেশ মৈত্র

যেভাবে বাংলাদেশে ইসলামী জঙ্গিদের উত্থান

বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের যে ব্যাপক উত্থান ঘটেছে, তাদের কার্যক্রম ক্রমশই সম্প্রসারিত হচ্ছে এবং ইতোমধ্যেই বহুলাংশে তাদের বিস্তার ঘটাতে পেরেছে। বাংলাদেশের শাসকগোষ্ঠী তা নিরন্তর অস্বীকার করে এগুলো ‘কোনো উল্লেখযোগ্য ঘটনা নয়’ বা ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ বলে উড়িয়ে দিতে চাইলেও আন্তর্জাতিক অঙ্গণে বাংলাদেশের জঙ্গি উত্থান এক মারাত্নক উদ্বেগের সঞ্চার করেছে এবং তার বহি:প্রকাশ ঘটেছে গত ৯ জুনে প্রকাশিত নিউ ইয়র্ক টাইমসের একটি বিস্তারিত প্রতিবেদনে।
ওই প্রতিবেদনটিতে প্রধানত: বাংলাদেশের সরকারি মহলের কর্মকর্তাদেরই বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে ইসলামী লেবাস পরিহিত যে তরুণটি ঢাকার একটি জনাকীর্ণ চেকপোষ্টের পাশ দিয়ে যাচ্ছিল, সে অধুনা তৎপর পুলিশের দৃষ্টি এড়াতে পারেনি। তরুণটিকে গ্রেফতার করা হয়। অত:পর দেখা যায়, যে একটি চাপাতি এবং লাইসেন্সবিহীন পিস্তল ও ছয়টি বুলেট নিয়ে যাচ্ছিল। তরুণটির কাছ থেকে অস্ত্র উদ্ধার হওয়ায় একটি আতঙ্কের কারণ বিগত তিনটি বছর ধরে বাংলাদেশে ‘নাস্তিক’ অভিধায় অভিহিত করে স্বাধীনচেতা লেখক, মুক্তমনা ব্লগার, মুক্তচিন্তায় বিশ্বাসী, বিদেশী নাগরিক, ধর্মীয় সংখ্যালঘু এবং অপরাপর নানাবিধ পেশায় নিয়োজিত সম্মানিত ব্যক্তিদেরকে হত্যা করে চলেছে।
এই হত্যাকারী আসলে কারা সে সম্পর্কে খুব কমই জানা গেছে। তবে এইটুকু শুধু জানা যায় যে তারা ইসলামের নামে ‘জিহাদের কর্মী এবং ক্রমশই তাদের জিহাদ নামক হত্যালীলা অধিকতর সংখ্যায় সংঘটিত হচ্ছে। আটককৃত ঐ তরুণটি পুলিশের নানা প্রশ্নের জবাবে বেশী কিছু বলতে রাজী হয়নি। শুধুমাত্র বলেছে যে তার নাম সাইফুল ইসলাম, বয়স ২৩ বছর এবং স্থানীয় একটি মাদ্রাসার শিক্ষক। কিন্তু মাত্র ছয় দিনের ব্যবধানে চিত্রটি পাল্টে গেল যখন ১৯ বছর বয়সী অপর দু’জন একটি সফল হত্যালীলা পরিচালনা করে ছুটে পালানোর সময় গ্রেফতার হয়ে পুলিশের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে প্রকাশ করে দেয় যে ২৩ বছর বয়স্ক সাইফুল ইসলাম তাদেরই সহকর্মী, কোনো মাদ্রাসা শিক্ষক নয়।
ছোট্ট এই ঘটনাটি বাংলাদেশের পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে অধিকতর সতর্ক এবং সক্রিয় হতে বাধ্য করেছে। এখন তারা অনেক গভীরে ঢুকে নানা অজানা তথ্য উদঘাটনে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। জঙ্গিদের পরিকল্পনা তার বাস্তবায়ন এবং হত্যার উদ্দেশ্য জেনে বাংলাদেশের মানুষ তো বটেই বাস্তবিক পক্ষেই সমগ্র বিশ্বে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। একটি দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের পুলিশের কাউন্টার টেররিজমের প্রধান মনিরুল ইসলাম তার তদন্ত কাজগুলির বিবরণ জনসমক্ষে তুলে ধরেছেন। বিগত ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি এই দায়িত্ব প্রাপ্ত হন।
২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ৩৯ জনকে এই জঙ্গিরা বর্বরোচিতভাবে হত্যা করেছে এবং এতে ব্যবহৃত অস্ত্র হলো চাপাতি, বন্দুক বা পিস্তল ও বোমা। এই হত্যাকাণ্ডগুলির বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই চাপাতি ব্যবহৃত হয় এবং তাই দিয়ে ভিকটিমের পিঠে আঘাত করে গলা কেটে ফেলতে দেখা যায়। এরকম হত্যা ইদানিং বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এপ্রিলে এভাবে পাঁচজনকে এবং মে মাসে চারজনকে হত্যা করা হয় এবং কমপক্ষে আরও তিনজনকে হত্যা করা হয়েছে জুনের প্রথমার্ধেই।
গত ৫ জুন একই দিনে উত্তরাঞ্চলের নাটোরের একজন খ্রিষ্টান মুদির দোকানি ও চট্টগ্রামে তথাকার পুলিশ সুপারের স্ত্রীকে হত্যা করা হয়। অত:পর দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলে একজন হিন্দু পুরোহিতকে বিশাল মাঠের মধ্যে খুন করা হলো। দীর্ঘ ইন্টারভিউতে পুলিশের কাউন্টার টেররিজমের প্রধান মনিরুল ইসলাম তার তদন্ত কাজের ফলাফল খুঁটিনাটি তুলে ধরে বলেন, দুইটি জঙ্গি গ্রুপ এই হত্যাকাণ্ডগুলি চালিয়ে থাকে। তারা হাজার হাজার স্বেচ্ছাসেবক রিক্রুট করেছে, অস্ত্র প্রশিক্ষণ দিয়েছে এবং অত:পর এক একজন কমান্ডারের নেতৃত্বে তাদেরকে বিভিন্ন গ্রুপে পাঠিয়ে এই হত্যালীলা পরিচালনা করছে। তারা অত্যন্ত সতর্কভাবে তাদের লক্ষ্য (টার্গেট) নির্দিষ্ট করে যাতে জনমত তাদের পক্ষে থাকে এবং এভাবেই খুনীদের প্রশিক্ষিত টিম গড়ে তোলে। তাদের মূল লক্ষ্য হলো বাংলাদেশের মিশ্রিত ধর্মনিরপেক্ষ ও ইসলামী সংস্কৃতিকে পরিবর্তন করে নিখাদ ইসলাম ধর্মীয় রাষ্ট্রে বাংলাদেশকে পরিণত করা।
বাংলাদেশ সরকার এখানে স্বীকার করেন যে ঐ দুটি জঙ্গি গ্রুপই এগুলি পরিচালনা করছে এবং তারা প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করতে। জঙ্গিদের নেতারা যখন ধরা পড়বেন, তাদের মতে, এই হত্যালীলা ও আক্রমণ বন্ধ হবে। তবে ইসলামী মৌলবাদ যে ইসলামসম্মত নয় তা জনগণকে বুঝিয়ে আনতে হবে।
সরকার এখন বলেছে, উভয় জঙ্গি গ্রুপের মূল নেতাদেরকে তারা চিহ্নিত করতে পেরেছেন- ঐ নেতারাই এই ঘটনাগুলির জন্য দায়ী। পূর্ব ভারতের সংলগ্ন মুসলিম প্রধান রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে ১৯৭১ সালে এবং তখন একটি ধর্মনিরপেক্ষ গণতন্ত্রে বিশ্বাসী সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু ১৯৭৫ সালে একটি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সামরিক বাহিনী সমর্থিত সরকার একতা গড়ে প্রায় তিন দশক শাসন কাজ পরিচালনা করে। ঐ সময়েই ইসলামী মৌলবাদের প্রসার ঘটতে শুরু করে। ২০০৯ সালে একটি ধর্ম নিরপেক্ষ সরকার ক্ষমতায় পুনরায় অধিষ্ঠিত হন বিপুল সংখ্যক আসনে বিজয়ী হয়ে শাসন ক্ষমতায় বসেন। তবে ধর্মনিরপেক্ষতা বাংলাদেশের ব্যাপক জনগোষ্ঠির কাছে আজও গ্রহণযোগ্য হয় নি-তাই গোঁড়া ইসলামী সংস্কৃতি প্রবর্তিত হয়েছে। নিউ ইয়র্ক টাইমসের ওই প্রতিবেদনে এমন কথা বলা হয়েছে।
মনিরুল ইসলাম বলেন, উগ্র ধর্মান্ধ জঙ্গিরা ধর্ম নিরপেক্ষ মতবাদকে সমাজে বহুলাংশে হেয় ও অগ্রহণযোগ্য করে তুলতে সক্ষম হয়েছে। তারা ধর্মনিরপেক্ষতার বিশ্বাসী সরকারটিকে আত্নরক্ষামূলক অবস্থানে ফেলতেও সক্ষম হয়েছে। ফলে, একদিকে সরকার হত্যাকাণ্ডগুলির প্রতিবাদ জানাচ্ছে, অপরদিকে লেখকদেরকে ইসলামের বিরুদ্ধে বা তার সমালোচনা করে না লেখার আহবান জানিয়েছে-আহবান জানিয়েছে ‘অস্বাভাবিক মৌনতা’র সমর্থনে কোনো কিছু না বলতে।
এ বিষয়ে ইনষ্টিটিউট অব ল এন্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ এর পরিচালক অবসর প্রাপ্ত মেজর আব্দুর রশীদ বলেছেন, জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান চালালে হত্যালীলা বন্ধ হবে কিন্তু সরকার ততটা এগুতে রাজী না; এই ভেবে যে তার প্রতিকূল প্রতিক্রিয়া হতে পারে। দেশের রাজনীতি এখন দুটি শিবিরে বিভক্ত হয়ে পড়েছে একটি ধর্মনিরপেক্ষ অপরটি ইসলামভিত্তিক। এ কারণেই সরকার অত্যন্ত সতর্ক।
এ বিষয়ে মনিরুল ইসলাম বলেন, যখন মৌলবাদীদের ব্যাপক ক্রিয়াকলাপের বিরুদ্ধে ‘শাহবাগ আন্দোলন’ নামে পরিচিত শক্তিশালী গণআন্দোলন গড়ে তুলতে চেষ্টা করা হয়, জঙ্গিরা তখন ইচ্ছাকৃতভাবেই লোকজনকে হত্যার মধ্য দিয়ে হত্যাভিযান শুরু করে। শাহবাগ আন্দোলন গড়ে ওঠে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির অবসানের দাবীতে এবং ১৯৭১ এর যুদ্ধাপরাধীদের মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করার দাবীতে। এই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করে যখন বেশ কয়েকজনকে ফাঁসি দেওয়া হলো তখন ইসলামী জঙ্গিরা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।
উল্লেখ্য, শাহবাগ আন্দোলনটি ২০১৩ সালে গড়ে ওঠে ব্লগারদের নেতৃত্বে।
মনিরুল ইসলাম নিউ ইয়র্ক টাইমসকে বলেন, এই হত্যালীলা চালানোর দায়িত্ব নিয়েছে দুটি জঙ্গি গ্রুপ। এক, আনসার আল ইসলাম- যারা অত্যন্ত ফলপ্রসূ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দুর্ধর্ষ খুনি গড়ে তুলেছে তাদের অপারেশন কমান্ডারদের দ্বারা। এসব কমান্ডারদের নাম প্রকাশে তিনি অবশ্য অস্বীকৃতি জানান; কারণ তাদেরকে কঠিন নজরে রাখা হয়েছে। তবে এদের নেতা বা কমান্ডাররা ২৫ জন প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত খুনি তৈরি করেছে-যাদের কেউ কেউ সাম্প্রতিক ৩/৪টি আক্রমণ পরিচালনা করেছে। দ্বিতীয়ত: জামাতুল মুজাহেদীন বাংলাদেশ-জেএমবি। এদেরকে চিহ্নিত করা হয় ২০০৫ সালে সারা দেশে একই সাথে প্রায় ৫০০ বোমা ফাটিয়ে ছিল সাফল্যের সাথে। এদেরই একটি অংশ এখন অধিকতর সক্রিয়।
সাক্ষাতকারে মনিরুল ইসলাম অবশ্য আরও বলেন যে এই দুটি গ্রুপই দুর্ধর্ষ ইসলামী জঙ্গিগ্রুপ হলেও এরা কেউই আল কায়েদা বা আইএস জাতীয় আন্তর্জাতিক ইসলামী জঙ্গি সংস্থার সাথে সংশ্লিষ্ট নয়। এই গ্রুপ দুটি শাহবাগ আন্দোলনের বিরুদ্ধে ত্বরিত সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং ১৫ ফেব্রুয়ারি তারিখে একজন ব্লগারকে হত্য করে এই অভিযোগ এনে যে তিনি সরাসরি ইসলামে বিরুদ্ধে লিখে থাকেন। তিনি লিখতেন ‘থাবা বাব’ এই ছদ্মনামে। ঢাকার নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির কতিপয় মেধাবী ছাত্র এই নামে লিখতেন এবং তার প্রতিক্রিয়ায় জসীম উদ্দিন রাহমানি নামক ৪৫ বছর বয়স্ক একজন ইসলামী খাদেম ঐ ব্লগারদের হত্যা করার নির্দেশ দেন। অবশ্য জসীম উদ্দিন রাহমানিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অার ৩২ বছর বয়স্ক একই বিশ্ববিদ্যালয়ের অপর একজন ছাত্র রেদোয়ানুল আজাদ, আনসার আল ইসলামের অপর একজন নেতা জুনিয়র ছাত্রদেরকে জসীম উদ্দিন রাহমানির উদ্দীপক বক্তব্য দিয়ে ক্ষেপিয়ে তুলে থাবা বাবা নামের লেখকদেরকে হত্যা করতে উত্তেজিত করে তুলতে থাকে।
ঐ রেদোয়ানুল ইসলামের বক্তব্য ছিল, ‘একজন আল্লাহর অস্তিত্বে বিশ্বাসী হিসেবে তাদেরকে হত্যা করাটা তোমাদের পবিত্র দায়িত্ব।’ আটক হওয়া একজন আদালতে এমন বক্তৃতার কথা স্বীকারও করেছে। সে আদালতে বলেছে, ঐ বক্তব্যে বিশ্বাস স্থাপন করে তারা থাবা বাবাকে হত্যার পরিকল্পনা করে- কারণ থাবা বাবা আল্লাহকে অপমানিত করেছে। আটক ওই জঙ্গির নাম ফয়সাল বিন নঈম (২৪)। সে বলেছে, থাবা বাবার ছবি ফেসবুকে দেখে এবং তখন থেকে তাকে খুঁজতে থাকে এবং এক পর্যায়ে অনুরূপ চেহারার একজননের সন্ধান পায় শাহবাগ আন্দোলনকারীদের মধ্যে। অবশেষে একজন ৩২ বছর বয়স্ক আর্কিটেক্ট-যার নাম আহমেদ রাজীব হায়দার তাকেই থাবা বাবা হিসেবে চিহ্নিত করে। অত:পর রাজীবের দৈনন্দিন কাজের রুটিন অনুসরণ করে শেষ পর্যন্ত একদিন তারা তিনজন মিলে রাজীবের বাড়ীর সামনে রাত্রি প্রায় ৯টার দিকে পেয়ে যায়। নঈম তখন চাপাতি দিয়ে তার মাথার পেছনে, গলায় আঘাত করলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন ঐ আকষ্মিক আঘাতের ফলে।
এরপর প্রধান ইসলামী জঙ্গি গ্রুপ হিসেবে আনসার আল ইসলাম প্রচার করতে শুরু করলো যে নাস্তিক ব্লগারদের হত্যাকারীরাই হলো প্রকৃত ইসলাম সেবক। অন্তত: দুটি জাতীয় দৈনিক প্রকাশিত কয়েকটি লেখা তাদেরকে আরও বেশী করে ক্ষুব্ধ করে তোলে এবং পাঠকদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশও এতে ক্ষুব্ধ হন বলে অভিযোগ। এরা শুরুতে শাহবাগ আন্দোলনের সমর্থকও ছিলেন। পরবর্তী দুই মাসে আরও দুইজন ব্লগারকে হত্যা করা হয়। পুলিশ নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের যে সব ছাত্রকে জঙ্গি হিসেবে সক্রিয় ছিল তাদেরকে গ্রেফতার করতে শুরু করে। বিশেষ করে যারা হায়দার হত্যায় জড়িত ছিল। পুলিশ পুনরায় রাহমানিকেও গ্রেফতার করে। এরফলে আনসার আল ইসলাম আরও বেশী হত্যাকাণ্ড পরিচালনা থেকে বিরত হয় এবং এরাই আনসারুল্লাহ বাংলা টিম বলেও পরিচিত। কিন্তু তারা পুনরায় পুনর্গঠিত হয় সন্ত্রাসী সেল এ যার সংখ্যা জানা যায়নি।
মনিরুল ইসমাল বলেন, গত বছর ফেব্রুয়ারিতে আনসার আল ইসলাম অভিজিত রায় নামক আমেরিকা প্রবাসী এক বাংলাদেশী ব্লগারকে ঢাকায় হত্যা করে। অভিজিত রায় আমেরিকাতে একটি বায়োটেকনোলজি ফার্মে দিনে কাজ করতেন এবং রাত্রিতে নানা বিষয়ে বিস্তর লেখালেখি করতেন যার মধ্যে ধর্ম, বিজ্ঞান, সমকামিতা প্রভৃতি ছিল। বিপুল সংখ্যক আনসার আল ইসলাম জঙ্গিকে কারারুদ্ধ করার পর জেলের ভেতর থেকে পুলিশ এক গোপন তথ্যে জানতে পারে যে পুনর্গঠিত আনসার আল ইসলাম তাদের কর্ম কৌশল পরিবর্তন ঘটিয়েছে এবং তারা মাদ্রাসার ছাত্রদেরকে বিপ্লবী করতে মাদ্রাসার ছাত্রদেরকে রিক্রুট করতে শুরু করেছে। মাদ্রাসার শিক্ষকরাও বাদ যাচ্ছেন না। ২০১৩ সালে ব্লগারদের বিরুদ্ধে মাদ্রাসা শিক্ষক ছাত্রদের তীব্র প্রতিবাদ সংগঠিত করতে দেখে তারা তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে রিক্রুটের চাইতে মাদ্রাসাগুলির উপর বেশী গুরুত্ব আরোপ করতে শুরু করে। অত:পর তারা আরও গুরুত্ব দিয়ে আদর্শগত ও অস্ত্র প্রশিক্ষণ দিতে থাকে অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে।
অভিজিত রায়ের হত্যার এক মাস পরেই ওয়াশিকুর রহমান বাবু (২৭) নামক অপর একজন ব্লগারকে হত্যা করে। তারা একটি এপার্টমেন্ট ভাড়া নিয়ে সেখানে দুইজন সিনিয়র অস্ত্র প্রশিক্ষক থাকতো একটি ভষ্যিতে খুনী হিসেবে প্রশিক্ষণ নেবেন এমন একটি গ্রুপের মাদ্রাসা ছাত্রের সাথে। একজন শিক্ষা দিত কিভাবে চাপাতি দিয়ে আঘাত করলে মানুষ নির্ঘাত খুন হয় এবং কিভাবে পিস্তল ব্যবহার করতে হয় যদি চাপাতি দিয়ে আঘাতের সময় কেউ ছুটে আসে তাকে বাঁচাতে এমন লোকজনদের হটিয়ে দিতে। নিহত ব্লগার আশিকুর রহমান বাবুর ছবি এবং ঠিকানা তাদের হাতে দিয়ে বাবুর বাড়ীর কাছে মহড়া দিতে পাঠানো হতো এটা নির্ধারণ করতে যে; কোন পরিস্থিতিতে কখন নিরাপদে হত্যা করা যেতে পারে। অন্যদিকে বাবুর কিছু সংখ্যক নির্দিষ্ট লেখা পড়িয়ে ঐ প্রশিক্ষণার্থী গ্রুপকে জিজ্ঞেস করা হতো, এই সব ধরণের লেখা যে লেখে তার শাস্তি কি হওয়া উচিত? শিক্ষার্থীরা সমস্বরে জবাব দিত ‘একমাত্র মৃত্যু’।
Moktel H. Mukthi's photo.মনিরুল ইসলাম জানান, পুলিশ এখন এদেরকে ধরার সর্বাত্নক প্রচেষ্টা করছে। সন্দেহভাজনদের ছবিসহ জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় পুলিশের পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপন দিয়ে বলা হয়েছে যে, ‘যারা বা যিনি এদের ধরার ক্ষেত্রে সঠিক তথ্য দিতে পারবে তাকে পাঁচ লক্ষ টাকা পুরষ্কার দেওয়া হবে। অন্য জঙ্গি গ্রুপ জামাতুল মুজাহেদীন বাংলাদেশ-জেএমবি অবশ্য আনসার আল ইসলামের চেয়ে কম সক্রিয়। কতিপয় ভুল পদক্ষেপের কারণে তাদের সমর্থক সংখ্যা কমে গেছে। এই গ্রুপ ৫০ থেকে ১০০ জন মাদ্রাসা ছাত্রকে প্রশিক্ষণ দিয়েছিল খুনী হিসেবে তাদেরকে চারজন করে এক একটি গ্রুপে সংগঠিত করেছিল। কিন্তু এরা এমন ব্যক্তিদের খুন করে ফেলে যারা ব্যাপক সক্রিয় হয়ে ওঠেন। এদের একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অন্যজন হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক যিনি দরিদ্র রোগীদের বিনা পয়সায় চিকিৎসা সেবা দিতেন।
যখন হত্যাকারীদেরকে গ্রেফতার করা হলো, তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেল যে তারা ৬৬ বছর বয়স্ক একজন জাপানী নাগরিককে হত্যা করেছে। অথচ ২০১৫ সালেই তাকে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত করা হয়েছিল। ফলে এই খুনীরা দ্রুত জনপ্রিয়তা হারায় এবং জনগণ ওই খুনীদেরকে ধরতে পুলিশকে ব্যাপক সহযোগিতাও দেয়। পুলিশ এখন তাদের নেতাদেরকে ধরতে সচেষ্ট। বাংলাদেশে বর্তমানে মানুষ আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন, বলেন মনিরুল ইসলাম।
অনেকে লুকিয়ে আছেন-অনেকে দেশত্যাগী হয়েছেন-আবার অনেকে তাদের দৈনন্দিন রুটিন পরিত্যাগ করে লেখালেখি ছেড়েছেন এবং এমন কি, সন্তানদের স্কুলে আনা নেওয়াও ছেড়েছেন। এই জঙ্গিদের কার্যকলাপের ফলে জাতিকে এই মূল্য দিতে হচ্ছে, বলেন সুধীজনেরা।
নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলামের ইন্টারভিউ নিয়ে লেখাটি হয়তো আগ্রহী পাঠক পাঠিকাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হবে এবং দেশের পরিস্থিতি বুঝতেও কিছুটা সহায়ক হবে। পাবনার আশ্রমসেবক হত্যাকাণ্ড লেখাটি শেষ হতে না হতেই জানলাম, গত ১০ জুন ভোরে পাবনার বিখ্যাত (এবং আন্তর্জাতিক খ্যাতি সমৃদ্ধ) হেমায়েতপুরের শ্রী শ্রী অনুকূল ঠাকুরের আশ্রমে ৪০ বছর ধরে সেবক হিসেবে কর্মরত ৬২ বছর বয়স্ক নিত্যানন্দ পান্ডেকে ভোর বেলায় নৈমিত্তিক প্রাত:ভ্রমণকালে একই পদ্ধতিতে চাপাতি দিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যাকারীরা আঘাতই শুধু করেনি তার মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যায়।
আশ্রম কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে একটি মামলা দায়ের করেছেন। এই নিত্যরঞ্জনকে হত্যা করা হলো পুলিশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে। কারণ আগের দিন আইজির নেতৃত্বে পুলিশের সিনিয়র কর্মকর্তারা (সম্ভবত: চট্টগ্রামের এসপির স্ত্রী হত্যার পটভূমিতে) সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো ঐ দিন রাত ১২টা এক মিনিট থেকেই জঙ্গি-সন্ত্রাসী ধরার জন্য দেশব্যাপী সমন্বিত সপ্তাহব্যাপী অভিযান শুরু করবে এবং তা করাও হয়। ওই অভিযান শুরুর মাত্র ৬-৭ ঘণ্টা মধ্যেই এবং পবিত্র রমজানের শুরুতেই হেমায়েতপুর আশ্রমের নিষ্ঠাবান সেবক নিত্যানন্দ পান্ডেকে নির্মমভাবে আশ্রমের নিকটেই খুন করা হলো। আমি শোকাহত। আমরা সমগ্র জাতি শোকাহত। গোটা পৃথিবী উদ্বিগ্ন আজকের বাংলাদেশ নিয়ে।
(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। চ্যানেল আই অনলাইন এবং চ্যানেল আই-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।)

MukthizCreation

SUPPORT AWAMI LEAGUE, VOTE NOUKA ONCE AGAIN
তারেক খালেদা ফালু দুদু মীর্জা আব্বাস সাদেক হোসেন খোকা ইউনুস এরা চোর কি ভাল? এ জাতীয় জরিপ করে সময় নষ্ট না করে আমার মনে হয় আওয়ামী লীগের প্রচারের দিকে গুরুত্ব দিলে বেশী লাভবান হবো।
মাননীয় নেত্রী এবং সজীব ওয়াজেদ জয়ও সেদিকেই গুরুত্ব দিয়ে বলেছেন যে আওয়ামী লীগ যতটা কাজ করে তার এক ত্রিতিয়াংশও প্রচার হয়না; যেটূকু হয়, সেটূকু ঢাকা পরে যায় বি এন পি জামাত শিবিরের অপপ্রচারের কারনে। সকলের নিকট তাই প্রত্যাশা আরো অনেক বড় কিছু। প্লিজ সবাই দলীয় প্রচার করুন; অন্যের দুর্নামের চেয়ে নিজ দলের প্রশংসা করে সময় নষ্ট করি। যাতে আগামী ২০১৯ এর নির্বাচনে নৌকার স্বপক্ষে কিছুটা হলেও কাজে লাগে। জনমত গড়ে তোলার কাজে আমরা ঐকান্তিক আগ্রহ নিয়ে ঝাপিয়ে পড়লে কেন সফল হব না? আমি যদি এই ৬৫ বছর বয়সে প্রতিদিন আওয়ামী লীগ কে ৮ থেকে ১০ ঘন্টা দিতে পারি, আপনারা কি প্রতিদিন ১ থেকে দুই ঘন্টা দিতে পারেন না? পারেন। কিন্তু কেউ কেউ দেখছি অযথা একটি অহেতুক / অবান্তর বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে নিজের সময়ের টুটি চেপে ধরেন এবং বন্ধুদেরকেও সে কাজে আগ্রহী করে তোলেন।
কেউ ভুল বুঝবার কিছু নেই; আমি এমনই বিগত ১৭ বছর ধরে ফেচবুকে নিজের খাই আওয়ামী লীগের মোষ তাড়াই।
মোকতেল হোসেন মুক্তি
মুক্তিযোদ্ধা
জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু।
















 Our great two sisters, the pride daughter of Bangabandhu.
আমাদের হাসু আপা ও তাঁর স্নেহের রেহানা। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্ট জাতিরজনকের পরিবারের ১৮জন সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়; মহান আল্লাহর অশেষ করুনা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা দেশের বাইরে থাকার কারনে আজ বাঙ্গালী জাতি একজন সফল দীপ্ত দৃঢ় প্রত্যয় ও মনোবলের একজন রাষ্ট্রনায়ক পেয়েছি। আমরা এই দুই এতিম বোনের সুদীর্ঘ আয়ূ ও সুশাস্থ্য কামনা করি। তাদের উপর আল্লাহর বিশেষ রহমত নাজিল হোক; সকল বিপদ আপদ দুর্নাম থেকে আল্লাহ যেনো রক্ষা করেন।
জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু ।